
শেরপুরের শ্রীবর্দী উপজেলার চাঞ্চল্যকর কিশোরী অপহরণ ও ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় ২৪ বছরের সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামি ৯ বছর ধরে আত্মগোপনে থাকার পর র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে শেরপুর জেলার সদর ও শ্রীবর্দী থানা এলাকা হতে তাদের গ্রেপ্তার করেছে র্যা ব-১৪।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন শ্রীবরদী শহরের উত্তর শ্রীবর্দীর মোঃ শমসের আলীর ছেলে মোঃ আমের আলী (৪০) ও ছনকান্দা বেপারীপাড়া গ্রামের মোঃ সুরুজ আলীর ছেলে মোঃ কাশেম (৩৫)। আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ধৃত আসামীদ্বয়কে আদালতে হস্তান্তর করা হয়েছে।
র্যা ব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর ক্যাম্পের এক প্রেস রিলিজে জানানো হয়েছে, ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামানের নেতৃত্বে এবং সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এম এম সবুজ রানার উপস্থিতিতে র্যাবের একটি অভিযানিক দল শুক্রবার রাতে জেলার শ্রীবর্দীর ছনকান্দা ব্যাপারীপাড়া হতে কাশেম’কে আটক করে। পরে শেরপুর শহরের খোয়ারপাড় এলাকা হতে রাত ৯ ঘটিকায় আমের আলীকে আটক করে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি আসামীদ্বয় ভিকটিমের বাড়ীতে বাসা ভাড়ার জন্য আসে। স্কুল পড়ুয়া ছাত্রী ভিকটিম তখন তার নানা বাড়ীতে যাচ্ছিল। আসামিরা তার পিছু নিয়ে নানা বাড়ীর কাছে মুন্সিপাড়া এলাকা থেকে ভিকটিমকে অপহরণ করে। উড়না দিয়ে ভিকটিমের মুখ বেধে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে অটোরিক্সায় কর্ণজোড়ার দিকে নিয়ে যায় তারা। এদিকে ভিকটিম বাড়ীতে না ফেরায় তার পরিবারের লোকজন খোঁজাখুজি করতে থাকে। একপর্যায়ে স্থানীয় এক ব্যক্তি ভিকটিমের বাবাকে মোবাইলে জানায় যে, ভিকটিম কাকিলাকুড়া ব্রিজের পাশে পড়ে আছে। পরে ভিকটিমকে জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারে যে, আসামীদ্বয় তাকে অপহরণ করে কুলগাও পাহাড়ে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে। এসময় তার ডাকচিৎকারে লোকজন এগিয়ে এলে আসামিরা পালিয়ে যায় এবং স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করেন।
ওই ঘটনায় ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে পরদিন শ্রীবর্দী থানায় (মামলা নং-১২, ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন/২০০০ (সংশোধনী/০৩) ৭/৯(৪)(খ)/৩০) রুজু করেন। মামলার তদন্তকারী অফিসার তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
শেরপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোঃ আখতারুজ্জামান ২০২১ সালের ২৩ মার্চ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে মামলার দুটি পৃথক ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে উভয় আসামিকে ২৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৪০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করেন। ঘটনার পর থেকে দীরঘ ৯ বছর ধরে আসামিরা পলাতক ছিল।