
শ্রীবরদী (শেরপুর) প্রতিনিধি:
শেরপুরের শ্রীবরদীতে ফোঁড়া অপারেশন করার সময় ময়দান আলী (৫২) নামে এক রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (২২ জুন) বিকালে উপজেলার চৌরাস্তা মোড়ের ইউনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অফিস কক্ষে ওই ঘটনা ঘটে। শ্রীবরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিস সহায়ক মেহেদী হাসান শাহীনের বিরুদ্ধে ওই অপারেশন করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শাহীন ও সংশ্লিষ্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকরা গাঁ ঢাকা দিয়েছে। এঘটনা শনিবার রাতে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক সহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে মৃত ময়দান আলীর ছেলে মোস্তফা কামাল বাদী হয়ে শ্রীবরদী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে এজহার নামীয় জুয়েল ও তামিমকে আটক করেছে। মৃত ময়দান আলী শ্রীবরদী উপজেলার মামদামারী গ্রামের মৃত সুরুজ আলীর ছেলে।
শ্রীবরদী থানা পুলিশ, ও মৃতের পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইউনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নেই কোন অপারেশন থিয়েটার। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে বিভিন্ন সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিস সহায়ক মেহেদী হাসান শাহীনকে দিয়ে ছোটখাটো অপারেশন সহ হাড় ভাঙা রোগীদের চিকিৎসা প্রদান করেন।(২২)জুন শনিবার বিকালে মামদামারী গ্রামের ময়দান আলী তার শরীরের বাম হাতের বগলের নিচের অংশে (বুকের পাশে) একটি ফোঁড়ার (টিউমারের মতো) চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যায়। পরে জুরুরী বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাঁদেরকে শেরপুর সদর হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। এই সুযোগে রোগী ও তাঁর পরিবারের লোকজনের সাথে ৫ হাজার টাকায় চুক্তিতে অপারেশনের কথা বলে ইউনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায় কতিপয় দালাল। পরে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অফিস কক্ষে অভিযুক্ত শাহীন রোগীকে লোকাল এনেস্থিসিয়া দিয়ে ফোঁড়া অপারেশন করার সময় রোগীর মৃত্যু হয়। বিষয়টি বুঝতে পেরে শাহীন ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক পক্ষ দ্রুত সটকে পরে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশ থানায় নিয়ে আসে ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর মর্গে প্রেরণ করে।
মৃত ময়দানের চাচাতো ভাই আব্দুর রশিদ বলেন, আমাদের রোগী ময়দান আলী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিল। এসময় কতিপয় দালাল তাকে ইউনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়। পরে অপারেশন করার এক পর্যায়ে তাঁর মৃত্যু হয়। আমি এঘটনার উপযুক্ত বিচার চাই।
এব্যাপারে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লোকজনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাঁরা ফোন রিসিভ করেননি।
শ্রীবরদী থানা অফিসার ইনচার্জ কাইয়ুম খান সিদ্দিকী বলেন, এঘটনায় মৃত ময়দান আলীর ছেলে মোস্তফা কামাল বাদী হয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক সহ ৭ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেছে। ২ জনকে আটক করা হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।