
বিশেষ প্রতিনিধি:
শেরপুরে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. এনামুল কবিরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে শহরের সজবরখিলা এলাকার বিসমিল্লাহ মালেশিয়ান ফার্নিচার গ্যালারীর স্বত্বাধিকারী ও আসবাবপত্র ব্যবসায়ী মো. হারুন অর রশীদ খান তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
এএসআই এনামুল কবির শেরপুর জেলা শহরের গৌরীপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি বর্তমানে ঢাকা মেট্রেপলিটন পুলিশের শাহজাহানপুর থানায় এএসআই পদে কর্মরত রয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া লিখিত বক্তব্যে ব্যবসায়ী হারুন অর রশীদ খান বলেন, পুলিশের এএসআই এনামুল কবিরের সঙ্গে পরিচয়ের সুবাদে ব্যবসায়িক প্রয়োজনে তিনি (হারুন) এনামুলের কাছ থেকে প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা করে সুদ দেওয়ার শর্তে ৪ লাখ টাকা ধার নেন। এভাবে কয়েক মাস সুদের টাকা পরিশোধ করেন তিনি। পরবর্তীতে এএসআই এনামুল কবিরের স্ত্রী শামীমা খাতুন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে ভারতে চিকিৎসা করানোর জন্য টাকার প্রয়োজন বিধায় এনামুল সুদসহ ধারের সাকুল্য টাকা পরিশোধের জন্য ব্যবসায়ী হারুন অর রশিদকে চাপ দেন। এরপর গত বছর ১৯ অক্টোবর তিনি (হারুন) তাঁর সজবরখিলার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে তিনজন স্বাক্ষীর উপস্থিতিতে এনামুল কবিরকে সুদআসলে ৪ লাখ ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করে দেন। ধারের সাকুল্য টাকা বুঝে নেওয়ার পর এএসআই এনামুল কবির গত ৬ এপ্রিল রাত নয়টার দিকে অজ্ঞাতনামা ৩-৪ জন ভাড়াটিয়া লোক নিয়ে তাঁর (হারুন) সজবরখিলা এলাকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আসেন এবং তাঁর কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এই টাকা না দিলে তাঁকে ব্যবসা করতে দেওয়া হবে না মর্মে প্রাণনাশের হুমকি দেন। এছাড়াও তাঁর (হারুন) নাবালক সন্তানকে মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন ব্যবসায়ী হারুন অর রশীদ।
সংবাদ সম্মেলনে আসবাব ব্যবসায়ী হারুন অর রশীদ আরও বলেন, পুলিশ কর্মকর্তা এনামুল কবিরের এমন হুমকি-ধামকিতে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে গত ৮ এপ্রিল তিনি (হারুন) বাদী হয়ে এনামুল কবিরকে আসামি করে শেরপুরের সদর সি আর আমলী আদালতে একটি চাঁদাবাজীর মামলা করেছেন। আদালতের বিচারক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্রে) ট মিলন আহমেদ অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন।
এমতাবস্থায় ব্যবসায়ী হারুন অর রশীদ মামলাটি সুষ্ঠুভাবে তদন্তপূর্বক পুলিশ কর্মকর্তা এনামুল কবিরের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন জানান।
তবে পুলিশের এএসআই মো. এনামুল কবির ব্যবসায়ী হারুন অর রশীদ খানের সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, হারুন অর রশীদের সঙ্গে তাঁর কোন আর্থিক লেনদেন হয়নি। তাঁর (এনামুল) স্ত্রী শামীমা খাতুনের কাছ থেকে নেওয়া ধারের কোন টাকা হারুন অর রশীদ পরিশোধ করেননি। ধারে টাকা নেওয়ার জন্য হারুনের ব্যাংক হিসাবের চেক ও দলিল তাঁর স্ত্রী শামীমা খাতুনের কাছে রয়েছে। এখন উল্টো তাঁর (এনামুল) সামাজিক মর্যাদা ও সুনাম ক্ষুণ্ণ করার জন্য হারুন অর রশীদ এমন মিথ্যা অভিযোগ করেছেন বলে পুলিশ কর্মকর্তা এনামুল কবির দাবি করেন।