
শেরপুরে জাতীয় সংসদের আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. হযরত আলীসহ পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলে সদর উপজেলার চরমোচারিয়া ইউনিয়নের হরিণধরা এলাকা থেকে তাঁদের আটক করে সদর থানার পুলিশ। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে এলাকাবাসী ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে দুইজন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ১৭ রাউন্ড শটগানের গুলি ও তিন রাউন্ড কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে ‘ডামি’ আখ্যায়িত করে নির্বাচন বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলনের পক্ষে জনমত তৈরির নামে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের লক্ষ্যে মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. হযরত আলীর নেতৃত্বে বিএনপির ৫০ থেকে ৬০ জন কর্মী-সর্মথক শেরপুর সদর উপজেলার হরিণধরা এলাকায় সমবেত হন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিষয়টি জানতে পেরে সদর থানার পুলিশের একটি দল সেখানে গিয়ে বিএনপি নেতা হযরত আলীসহ পাঁচজনকে আটক করে। হযরত আলীকে আটকের সংবাদ পেয়ে হরিণধরা ও আশপাশের গ্রামের শতাধিক মানুষ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পুলিশের হেফাজত থেকে হযরতকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ইটপাটকেলের আঘাতে দুই পুলিশ সদস্য আহত হন।
সংবাদ পেয়ে শেরপুর সদর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সারকেল) সাইদুর রহমানের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় পুলিশ ১৭ রাউন্ড শটগানের গুলি ও তিন রাউন্ড কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত করমকরতা (ওসি) এমদাদুল হক বিএনপি নেতা হযরত আলীসহ পাঁচজনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটায় তিনি বলেন, হযরত আলীর নেতৃত্বে সংসদ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের প্রস্তুতিকালে তাঁকেসহ অন্যদের আটক করা হয়। এ ঘটনার বিষয়ে সদর থানায় মামলার প্রস্ততি চলছে। আটক হযরত আলীকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে আটক অন্য চারজনের নাম জানাতে পারেননি তিনি।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মো. মাহমুদুল হক মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে বলেন, ‘ডামি’ নির্বাচন বর্জন করার আহবান জানিয়ে শেরপুরে বিএনপির উদ্যোগে প্রচারপত্র বিতরণ ও গণসংযোগের মতো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছিল। এর ধারাবাহিকতায় হযরত আলীর নেতৃত্বে মঙ্গলবার বিকেলে হরিণধরা এলাকায় প্রচারপত্র বিতরণ ও গণসংযোগকালে পুলিশ তাঁকে আটক করে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হযরত আলীসহ আটক সকল নেতা-কর্মীর মুক্তি দাবি করেন তিনি।