
‘কৃত্য পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় চাই’ এই প্রতিপাদ্য সামনে রেখে শেরপুরে ক্যাডার বৈষম্য নিরসনসহ বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ন্যায্য দাবিসমূহ আদায়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে শেরপুর সরকারি কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শেরপুর সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি, শেরপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শিবশঙ্কর কারুয়া। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি, শেরপুর জেলা শাখা সম্মেলনের আয়োজন করে।
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শিবশঙ্কর কারুয়া বলেন, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা শিক্ষার রূপান্তরের অন্যতম কারিগর। তাঁরাই প্রণয়ন করেছেন নতুন শিক্ষাক্রম। এর বাস্তবায়নেও তাঁরাই অন্যতম শক্তি। শিক্ষা ক্যাডারের ১৬ হাজার কর্মকর্তা বর্তমান সরকারের ভিশন ২০৪১ তথা স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণে একযোগে কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু প্রাপ্য অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁরা। কোন কারণ ছাড়াই দুই বছর ধরে পদোন্নতি বন্ধ আছে। এই মুহূর্তে শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তার সংখ্যা ৭ হাজারের বেশি। এর মধ্যে অধ্যাপক পদে পদোন্নতিযোগ্য ১ হাজার ২০০ জন। সহযোগী ও সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তা আছেন ৩ হাজার করে ৬ হাজার। এই কর্মকর্তাদের পদোন্নতির জন্য সরকারের কোন অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন নেই। সবাই পদোন্নতিযোগ্য পদের বেতন স্কেলের সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে গেছেন। ক্যাডার সার্ভিসে শূন্যপদ না থাকলে পদোন্নতি দেওয়া যাবে না এমন কোন বিধান নেই। অথচ শিক্ষা ক্যাডারেকে শূন্যপদের অজুহাতে পদোন্নতি বঞ্চিত রাখা হয়।
শিবশঙ্কর কারুয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল ক্যাডারের জন্য সুপার নিউমারি পদে পদোন্নতি দিয়ে ক্যাডার বৈষম্য নিরসনের নির্দেশনা দিলেও তা পালিত হয়নি। প্রধানমন্ত্রী আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনের নির্দেশ দিয়েছেন বারবার। কিন্তু সে নির্দেশনা মানা হচ্ছে না। তিনি বলেন, শিক্ষা ক্যাডারের দাবিগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই অনেক পুরোনো। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা ক্যাডারের চলমান সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। কিন্তু শিক্ষা ক্যাডারের দাবিগুলো পূরণ হয়নি। এ কারণে দাবি আদায়ে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির কেন্দ্রিয় কমিটি কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, আগামী ২ অক্টোবর সারা দেশে এক দিনের কর্মবিরতি পালন এবং শিক্ষা ক্যাডারের ন্যায্য দাবি পূরণে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে আগামী ১০, ১১ ও ১২ অক্টোবর টানা তিন দিনের কর্মবিরতি পালন করা হবে।
এমন অবস্থার প্রেক্ষাপটে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির ন্যায্যদাবিসমূহ মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের নিকট দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে শ্রীবরদী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি, শেরপুর জেলা শাখার সভাপতি এ কে এম আলিফ উল্লাহ আহসান, শেরপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. আব্দুর রশীদ, সরকারি নাজমুল স্মৃতি কলেজের অধ্যক্ষ মো. আব্দুর রউফ বক্তব্য দেন। এতে বিভিন্ন কলেজের অর্ধশত শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।