
দেবাশীষ সাহা রায়, বিশেষ প্রতিনিধি
ভারতে অনুপ্রবেশের পর শেরপুরের ঝিনাইগাতীর এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার
অভিযোগ ওঠেছে। নিহত ব্যক্তির নাম আকরাম হোসেন (৩৫)। তিনি ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের বাকাকুড়া গ্রামের মৃত জহির উদ্দিনের ছেলে।
গত সোমবার (১১ আগস্ট) বিকেলে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের দক্ষিণ-পশ্চিম খাসি
হিলস জেলার খনজয় কৈথাকোণা গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। তবে ঘটনাটি বুধবার
দুপুরে আকরামের পরিবার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সূত্রে জানা গেছে। সেখানে বাড়িঘরে হামলা ও অপহরণের চেষ্টার অভিযোগে তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বলে
অভিযোগ ওঠেছে।
স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, সীমান্ত অতিক্রম করে অনুপ্রবেশ ও অপহরণের চেষ্টার অভিযোগে স্থানীয় লোকজন আকরামকে ধরে ফেলে এবং নির্মমভাবে মারধর করে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সেখান থেকে মহেশখোলা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা
করেন।
নিহত ব্যক্তির বড় ভাই ও বাকাকুড়া গ্রামের পান ব্যবসায়ী শেখ ফরিদ বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁর ভাই আকরামের মৃত্যুর খবরটি জানতে পারেন তাঁরা। তবে কীভাবে তিনি (আকরাম) ভারতে গিয়েছিলেন, তার কিছুই জানেন না। আকরামের লাশ ফেরানোর জন্য তাঁরা বিজিবির সঙ্গে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
উপজেলার কাংশা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মুসা মিয়া জানান, আকরাম হোসেন
দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় নিয়মিত বসবাস করেননি। তিনি (আকরাম) কীভাবে কার সঙ্গে
ভারতে গিয়েছেন, তা তাঁর স্বজনেরাও জানেন না। আকরামের মৃত্যুর খবর পেয়ে
তাঁর আত্মীয়-স্বজন লাশ দেশে ফেরত আনার জন্য স্থানীয় বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।
ময়মনসিংহের ৩৯ বিজিবির নকশী বিওপির সুবেদার আব্দুল লতিফ সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার বিষয়ে ভারতের বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।
ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআইসহ একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা গেছে, গত ৯ আগস্ট মধ্যরাতে আকরামসহ আটজন বাংলাদেশি সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের খাসি হিলস জেলার রোংদাংগাই
গ্রামে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করেন। পরে ওই গ্রামের এক বাসিন্দাকে অপহরণের
চেষ্টা এবং বাড়িঘরে হামলার অভিযোগে পাঁচ বাংলাদেশিকে আটক করে পিটুনি দিয়ে
পুলিশের হাতে তুলে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে আকরামসহ
আরও রয়েছেন বাংলাদেশি পুলিশ কনস্টেবল পরিচয়দানকারী জামালপুরের মারুফুর রহমান (৩২), জামালপুর সদর উপজেলার জাহাঙ্গীর আলম (২৫), নারায়ণগঞ্জের সায়েম হোসেন (৩০), কুমিল্লার মেহফুজ রহমান (৩৫) ও সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের
মোবারক হোসেন (৩২)। আটক বাংলাদেশিদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আকরাম
হোসেনের মৃত্যু হয়। তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর আদালতে সোপর্দ করা
হয়েছে। দুজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।