
শেরপুর সদর উপজেলার জমশেদ আলী মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম রেজার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বাক্ষর জালিয়াতি, নিয়োগ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে তাঁর অপসারণের দাবিতে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। একইসঙ্গে সমাবেশ থেকে কলেজ পরিচালনা পরষদের সদ্য নিয়োগকৃত সভাপতিরও পদত্যাগ দাবি করা হয়।
মঙ্গলবার বিকেলে সদর উপজেলার লছমনপুর ইউনিয়নের কুসুমহাটি বাজার মাঠে জমশেদ আলী মেমোরিয়াল কলেজ দুরনীতি প্রতিরোধ কমিটি ও সচেতন এলাকাবাসী এ সমাবেশের আয়োজন করে।
জমশেদ আলী মেমোরিয়াল কলেজ দুরনীতি প্রতিরোধ কমিটির আহবায়ক মো. আব্দুস সাত্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও কলেজ পরিচালনা পরষদের সাবেক সভাপতি মিনহাজ উদ্দিন মিনাল।
সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন লছমনপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রণজিৎ চন্দ্র দে, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা, ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদ, কলেজ দুরনীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্যসচিব নাসির হোসেনসাবেক ইউপি সদস্য খাদেম আলী, এলাকাবাসী আব্দুর রেজ্জাক, আব্দুল করিম প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, এলাকায় শিক্ষার হার বাড়াতে ২০০১ সালে সদর উপজেলার কুসুমহাটি এলাকায় সাবেক চেয়ারম্যান মিনহাজ উদ্দিন তাঁর বাবার নামে জমশেদ আলী মেমোরিয়াল কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। মিনহাজ সভাপতির দায়িত্বে থাকাকালে কলেজটি পর্যায়ক্রমে ডিগ্রি ও অনার্স কলেজে উন্নীত হয়। কিন্তু কলেজের অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম রেজার স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে কলেজটি আজ ধ্বংসের পথে। অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম কলেজ পরিচালনা পরষদের সাবেক সভাপতি মিনহাজ উদ্দিনের স্বাক্ষর জাল করে কলেজের ৪০ এর অধিক শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন। ভর্তি বাণিজ্য করে এবং পরীক্ষার ফরম পূরণের সময় নির্ধারিত ফির চেয়েও অধিক অর্থ নিয়ে আত্মসাত করেছেন। শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেছেন। অনেক শিক্ষককে পদোন্নতিবঞ্চিত করে অর্থের বিনিময়ে অন্য শিক্ষক-কর্মচারীকে পদোন্নতি দিয়েছেন। ব্যাংক হিসাবে লেনদেন না করে কলেজের অভ্যন্তরীণ আয়ের লাখ লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন। এছাড়া নিজের অপকর্ম যাতে প্রকাশ না পায় সেজন্য টিকে থাকতে অন্য এলাকার বাসিন্দাকে কলেজ পরিচালনা পরষদের সভাপতি বানিয়েছেন।
বক্তারা কলেজের সুনাম ফিরিয়ে আনতে অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম রেজার অপসারণ ও তাঁর স্থলে একজন সৎ-যোগ্য অধ্যক্ষ নিয়োগ করার জন্য প্রশাসনের নিকট দাবি জানান।
সমাবেশে করা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে জমশেদ আলী মেমোরিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম রেজা বলেন, ২০১০ সালে তিনি (শহীদুল) কলেজের অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন। আর ২০১৮ সালে কলেজ পরিচালনা পরষদের সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর থেকেই মিনহাজ উদ্দিন সামাজিকভাবে তাঁকে (শহীদুল) হেয় প্রতিপন্ন ও তাঁর সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্যই তাঁর বিরুদ্ধে মনগড়া অভিযোগ করে আসছেন।