দেবাশীষ সাহা রায়, বিশেষ প্রতিনিধি
সরকারি কৃষি প্রণোদনার ভাগ না পাওয়ায় শেরপুরের নকলা উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব রাহাত হাসান কাইয়ুমের বিরুদ্ধে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার মোরসালিন মেহেদীকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার দুপুরে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় কাইয়ুমের সঙ্গে ছাত্রদলকর্মী ফজলুও ওই কর্মকর্তাকে মারধর করেন। এ ঘটনায় কাইয়ুম ও ফজলুর বিরুদ্ধে নকলা থানায় মামলা হয়েছে।
এদিকে কৃষি কর্মকর্তাকে মারধরের সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। অভিযুক্ত রাহাত হাসান কাইয়ুম (৩৫) নকলা পৌরসভার ধুকুরিয়া এলাকার সুরুজ মোল্লার ছেলে এবং ফজলু (৩২) একই গ্রামের সিরাজুল হকের ছেলে।
কৃষি অফিস ও মামলা এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে নকলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার মোরসালিন মেহেদীর অফিস কক্ষে যান উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব রাহাত হাসান কাইয়ুম। এ সময় বাইরে অপেক্ষা করছিলেন ছাত্রদল কর্মী ফজলু। কাইয়ুম কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার মোরসালিন মেহেদীর কাছে কৃষি প্রণোদনা কাকে কাকে দেওয়া হয়েছে জানতে চান এবং ছাত্রদলের ভাগ তাঁকে দিতে বলেন। বিষয়টি মোবাইলে উপজেলা বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি খোরশেদুর রহমানকে জানালে কাইয়ুম আরও ক্ষিপ্ত হন এবং কথা বলার এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে কৃষি কর্মকর্তাকে সজোরে চড় মারেন। পরে তাঁকে টেনেহিঁচড়ে কক্ষের বাইরে নিয়ে ফজলু ও কাইয়ুম মারতে থাকলে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থল থেকে কৃষি কর্মকর্তাকে উদ্ধার করেন।
কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার মোরসালিন মেহেদী অভিযোগ করে বলেন, ‘ছাত্রদল নেতা রাহাত হাসান কাইয়ুম ও ফজলু আমার সরকারি অফিসে এসে আমি এখনো কেন বদলি হচ্ছি না জিজ্ঞাসা করে এবং প্রণোদনার ভাগ চায়। বিষয়টি উপজেলা বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি খোরশেদুর রহমানকে জানালে কাইয়ুম আরও ক্ষিপ্ত হয় এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে।’
জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাইম হাসান উজ্জ্বল সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনাটি সম্পর্কে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বিস্তারিত খোঁজ নিয়েছেন। কর্মরত সরকারি অফিসারের গায়ে হাত তোলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এই ঘটনায় দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল রাহাত হাসান কাইয়ুমকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ দলের সকল পদ থেকে তাঁকে বহিষ্কার করেছেন। বিষয়টি নিয়ে মামলা হয়েছে, আইনানুযায়ী পুলিশ ও প্রশাসন তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
তবে ঘটনার পর থেকে উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব রাহাত হাসান কাইয়ুম পলাতক থাকায় অভিযোগের বিষয়ে তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান আজ বৃহস্পতিবার বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার মোরসালিন মেহেদী বাদী হয়ে রাহাত হাসান কাইয়ুম ও ফজলুকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
এদিকে সরকারি কাজে কর্মরত অবস্থায় কৃষিবিদ শাহরিয়ার মোরসালিন মেহেদীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বিসিএস (কৃষি) এসোসিয়েশনের আহবায়ক কৃষিবিদ ড. মো. সাহিনুল ইসলাম।







