
দেবাশীষ সাহা রায়, বিশেষ প্রতিনিধি: শেরপুরের নকলা উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পরদিনই তরুণ সহযোগীদের নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে দরিদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের বোরো ধান কেটে দিয়েছেন আবু হামযা কনক। বুধবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের হুজুরিকান্দা ও চরমধুয়া গ্রামের তিন কৃষকের ৫০ শতক জমির বোরো ধান কেটে দেন নবনির্বাচিত উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবু হামযা কনক ও তাঁর সহযোগীরা। এতে দরিদ্র কৃষকের মুখে হাসি ফুটে ওঠেছে।
মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত নকলা উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন আবু হামযা কনক। কনক পান ৩১ হাজার ১৯৭ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোশারফ হোসেন সরকার পেয়েছেন ২৭ হাজার ১৪২ ভোট। কনক ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এলাকাবাসীর বিভিন্ন সমস্যার সমাধানসহ সমাজসেবার কাজে জড়িত রয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট কৃষক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে নকলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বর্তমানে উপজেলার বিভিন্নস্থানে বোরো ধান কাটা চলছে। ফলে সুলভমূল্যে শ্রমিক মিলছে না। তাছাড়া হাতে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় বেশি মূল্যের শ্রমিক দিয়ে অনেক দরিদ্র ও প্রান্তিক কৃষক ধান কাটতে পারছেন না। বিষয়টি জানতে পেরে ওইসব কৃষকের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন আবু হামযা কনক ও তাঁর সহযোগীরা। এর অংশ হিসেবে কনকের নেতৃত্বে একদল তরুণ বুধবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের হুজুরিকান্দা গ্রামের দরিদ্র ও প্রান্তিক কৃষক ফরিদুল হকের ৩০ শতক জমির এবং চরমধুয়া গ্রামের কাইল্যা মিয়া ও মিয়াদ আলীর ২০ শতক জমির বোরো ধান কেটে দেন এবং আঁটি বেঁধে খেত থেকে বাড়িতে পৌঁছে দেন। নবনির্বাচিত উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবু হামযা কনকের এমন উদ্যোগে ভীষণ খুশি হয়েছেন উপকারভোগী কৃষকেরা।
তরুণদের এমন সহযোগিতায় অত্যন্ত খুশি হুজুরিকান্দা গ্রামের কৃষক ফরিদুল হক বলেন, আবু হামযা কনকসহ কয়েকজন তরুণ তাঁর ৩০ শতাংশ জমির ধান কেটে দিয়েছেন। বিনা পারিশ্রমিকে এবার ধান কাটতে পারবেন তা স্বপ্নেও ভাবেননি। আর্থিক সংকটে ভুগছিলেন তিনি। ঠিক এ সময় তরুণেরা তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। এ জন্য তাঁদের ধন্যবাদ জানান তিনি।
নবনির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান আবু হামযা কনক বলেন, দেশজুড়ে ধান কাটা শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক দরিদ্র কৃষক শ্রমিকের অভাবে ধান কাটতে পারছেন না। তাই তাঁরা কৃষকের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। যতদিন কৃষকের ধান কাটা শেষ না হবে ততদিন তাঁরা মাঠে কাজ করবেন বলে জানান তিনি।