
শেরপুরের নকলা উপজেলা পরিষদের নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে নির্বাচন চলাকালে জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে একজনকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও আরেকজনকে তিনদিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে মঙ্গলবার নকলা উপজেলায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় নকলাবাসী জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর প্রশংসা করেছেন।
সরেজমিনে বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। বিকলে চারটা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলে। কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। পরে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোট গণনা করা হয়।
তবে নির্বাচন চলাকালে বেলা ১২টার দিকে উপজেলার কায়দা বালিকা দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টার অপরাধে সংক্ষিপ্ত বিচারিক আদালতের বিচারক ও সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নূর ই জাহিদ কায়দা পশ্চিম গ্রামের জিয়ার আলীকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
অপরদিকে, বেলা তিনটার দিকে কায়দা দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জি এম এ মুনিব দক্ষিণ কায়দা গ্রামের আব্দুল জলিলকে তিন দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করেন। পরে আদালতের নির্দেশে তাঁকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
এদিকে নির্বাচন চলাকালে জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল খায়রুম, পুলিশ সুপার মো. আকরামুল হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুক্তাদিরুল আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সাইদুর রহমান, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আনোয়ারুল হকসহ জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তা এবং র্যা ব ও বিজিবির সদস্যরা নিরপেক্ষতা ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, একটি পৌরসভা ও নয়টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত নকলা উপজেলার মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৬ জন। এর মধ্যে নারী ৯১ হাজার ২৩০ ও পুরুষ ৮৮ হাজার ৩৭৩ জন।
নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বর্তমান চেয়ারম্যান শাহ মো. বোরহান উদ্দিন (মোটরসাইকেল), উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ (আনারস), পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুবুল আলম সোহাগ (দোয়াতকলম), বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মুহাম্মদ সারোয়ার আলম তালুকদার (ঘোড়া) ও বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মোকছেদুল হক শিবলু (কাপপিরিচ) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ঘোষিত প্রাথমিক ফলাফলে এ কে এম মাহবুবুল আলম সোহাগ উপজেলা চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুকতাদিরুল আহমেদ শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য জেলা ও পুলিশ প্রশাসনকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।