
দেবাশীষ সাহা রায়, বিশেষ প্রতিনিধি:
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় প্রায় দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে বন্যহাতির আক্রমণে দুই জন নিহত হয়েছেন। নিহতেরা হলেন, আজিজুল ইসলাম আকাশ (৪০) ও এফিলিস মারাক (৪৫)।
মঙ্গলবার (২০ মে) রাত ৯টা ও সাড়ে দশটার দিকে উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের বড় গজনী দরবেশ তলা এবং গজনী-বাকাকুড়া রোড়ে পৃথক এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আজিজুল ইসলাম আকাশ গান্ধিগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুল হাকিমের ছেলে এবং এফিলিস বড় গজনী গ্রামের সোহান মারাকের ছেলে।
বন বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিন ধরে ২৫-৩০টির বন্যহাতির দল নালিতাবাড়ী সীমান্ত ছেড়ে ঝিনাইগাতির গজনী ও আশপাশ এলাকায় অবস্থান করে বোরো ধান, কাঁঠাল ও লিচুর বাগানসহ বিভিন্ন স্থানে হানা দিচ্ছিল।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে একদল বন্যহাতি বড় গজনী এলাকার একটি লিচু বাগানে হানা দেয়। এসময় স্থানীয় লোকজন মশাল ও সার্চ লাইট জ¦ালিয়ে হৈ-হুল্লোড় করে হাতির দলটি তাড়ানোর চেষ্টা করে। একপর্যায়ে রাত নয়টার দিকে হাতির তাড়া খেয়ে সবাই দৌড়ে পালালেও আজিজুল ইসলাম আকাশ পা ছিলে পড়ে যান। এসময় বন্যহাতি তাকে শুঁড়ে পেচিয়ে ও পায়ে পিষ্ট করে বিভৎসভাবে হত্যা করে।
অন্যদিকে রাত সাড়ে দশটার দিকে এফিলিসসহ স্থানীয় চার কৃষক বাকাকুড়া এলাকা থেকে বড় গজনীর দিকে আসছিলেন। এসময় শালবনে থাকা বন্যহাতির দল আকস্মিক তাদের ধাওয়া করলে অন্যরা দৌড়ে বাঁচতে পারলেও এফিলিসকে শুঁড়ে পেঁচিয়ে ও পায়ে পিষ্ট করে ছিন্নভিন্ন করে হত্যা করে।
ময়মনসিংহ বন বিভাগের রাংটিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নিহতদের পরিবারের পক্ষে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন করলে নিয়মানুযায়ী তাদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ দুই যুগ ধরে শেরপুরের গারো পাহাড় সীমান্ত এলাকায় বন্যহাতির দল আক্রমণ করে চলেছে। এতে প্রায় এক শত ব্যক্তি নিহত হয়েছেন অপরদিকে বিভিন্নভাবে অর্ধশত হাতি প্রাণ হারিয়েছে। হাতির আক্রমণের কারণে গারো পাহাড় এলাকায় বসবাসকারী মানুষ চরম আতঙ্কে দিন যাপন করছেন। তারা হাতি-মানুষের সহাবস্থানের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।