
বিশেষ প্রতিনিধি:
শেরপুর জেলার সীমান্ত জনপদে হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসনে হাতি সংরক্ষণ সমন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) তরফদার মাহমুদুর রহমান। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন ময়মনসিংহের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আ ন ম আব্দুল ওয়াদুদ। জেলা প্রশাসন এবং শেরপুর বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ যৌথভাবে এ সভার আয়োজন করে।
সভায় জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন, শ্রীবরদীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাবের আহমেদ, সাংবাদিক হাকিম বাবুল, বন বিভাগের মধুটিলা রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম, কৃষি বিশেষজ্ঞ হুমায়ুন কবীর, কৃষিবিদ মো. আমগীর কবীর প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সভায় বক্তারা হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসনে এলাকার মানুষের মধ্যে সচেতনতা জোরদার এবং এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমকে (ইআরটি) শক্তিশালী করার তাগিদ দেন। সেইসঙ্গে ইআরটি টিমের সদস্যদের সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে আনা এবং হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি ক্ষতিপুরণ প্রদানের নীতিমালা আরও সহজীকরণ ও ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তিতে দীর্ঘসূত্রিতা কমানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সভায় হাতি চলাচলের পথ বা করিডোর সংরক্ষণ এবং অভয়ারণ্য সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়া, হাতি উপদ্রুত এলাকায় হাতির খাবারের উৎস সৃষ্টি করা এবং সোলার ফেন্সিং ও বায়োফেন্সিং কার্যক্রমকে এগিয়ে নেওয়ার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন বক্তারা।
সভায় ডিসি তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, বনাঞ্চলে এবং আশপাশের অনেক এলাকায় বসবাসকারী অনেকের জমির মালিকানা ও উত্তরাধিকার নিয়ে ক্ষতিপুরণ পেতে নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। হাতির কারণে যাদের আবাদ-ফসল, ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ পাওয়ার বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত করা যায়, সেটি ভাবতে হবে। ক্ষতিপুরণ পাওয়ার প্রক্রিয়াটি বেশ সময়সাপেক্ষ এবং জটিল হওয়ার কারণে এ বিষয়ে স্থানীয়ভাবে কিছু করা যায় কি না, সে ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।
সভায় হাতি সংরক্ষণ সমন্বয় কমিটির সদস্য ও স্থানীয় সুধিজনেরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত. দীর্ঘ দুই যুগ ধরে শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বন্যহাতির দল অবস্থান করছে। হাতির দল মাঝে-মধ্যে খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে নেমে আসে। এ সময় হাতির আক্রমণে দুই যুগে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে নানা কারণে অর্ধশতাধিক হাতি মারা গেছে। হাতির আক্রমণে বিপুলসংখ্যক ঘরবাড়ি, ফসল ও গাছপালাও বিনষ্ট হয়েছে।