দেবাশীষ সাহা রায়, বিশেষ প্রতিনিধি
‘এসো আলো ছড়াই শেরপুরে’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়ে সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে ২১ কিলোমিটার হাফ ম্যারাথন-২০২৫। শুক্রবার ভোরে উপজেলার সীমান্তবর্তী রাংটিয়া-কামালপুর সড়কে শেরপুর রানার্স কমিউনিটির আয়োজনে এই হাফ ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত দৌড়বিদদের পাশাপাশি শেরপুর জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের প্রায় ৮০০ নারী-পুরুষ ও শিশু ম্যারাথন প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। আজকের ম্যারাথন প্রতিযোগিতাকে ঘিরে গারো পাহাড়ের শাল-গজারিসহ নানা প্রজাতির গাছপালা সমৃদ্ধ এই এলাকাটি বিভিন্ন বয়সী মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়। তাঁরা এখানে এক প্রাণবন্ত, উচ্ছ্বাসমুখর ও ঐক্যের পরিবেশ সৃষ্টি করেন।
শুক্রবার ভোর সাড়ে পাঁচটায় শীতের কুয়াশা মাড়িয়ে ঝিনাইগাতীর রাংটিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জড়ো হন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নারী-পুরুষ রানারগণ। সেখান থেকে শুরু হয় ‘হাফ ম্যারাথন’। পরে ওই সড়কে ১০ দশমিক ৫ কিলোমিটার দূরের তাওয়াকুচা এলাকা থেকে ইউটার্ন নিয়ে পুনরায় বিদ্যালয় মাঠে শেষ করে ২১ কিলোমিটার হাফ ম্যারাথন।
বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে অনুষ্ঠিত এই ম্যারাথনে শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও শেরপুর-৩ আসনে বিএনপির সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মো. মাহমুদুল হক রুবেল, ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম রাসেল, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ও শেরপুর-১ (সদর) আসনে বিএনপির সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ডা. সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কা, জামায়াতে ইসলামীর সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মো. রাশেদুল ইসলাম, শেরপুর সদর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মো. হযরত আলী প্রমুখ অংশ গ্রহণ করেন। ম্যারাথনে শিশু, বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষসহ সমাজের পিছিয়ে পড়া বেদে পল্লী, হরিজন পল্লী ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষেরা অংশ নেন। এ সময় প্রতিযোগীদের উৎসাহ দিতে উৎসুক দর্শনার্থীরা পাহাড়ি পথে অবস্থান নেন।
ইভেন্ট শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন ম্যারাথন সমন্বয়ক ও বিশিষ্ট সমাজসেবক রাজিয়া সামাদ ডালিয়া এবং আয়োজক কমিটির প্রতিনিধিরা।
২১ কিলোমিটার হাফ ম্যারাথনে অংশগ্রহণকারী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ম্যারাথনের সড়কটি ছিল গারো পাহাড়ের পাদদেশ ঘেঁষে আঁকাবাঁকা পাহাড়ি ঢাল আর উঁচুনিচু পথ। যা অনেকের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ালেও মনোমুগ্ধকর প্রকৃতি সেই ক্লান্তি ভুলিয়ে দিয়েছে।
শেরপুর রানার্স কমিউনিটির প্রতিষ্ঠাতা আল-আমিন সেলিম বলেন, পর্যটন শিল্পের বিকাশসহ শেরপুর জেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তুলে ধরতে এবং গারো পাহাড় ও বন্যপ্রাণী রক্ষা করতে তাঁদের সংগঠন এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
আল-আমিন সেলিম আরও বলেন, ‘যুবসমাজ দিন দিন মাদকের দিকে ঝুঁকছে। তাঁদের খেলাধুলার মাধ্যমে সুস্থ পথে ফেরানোই আমাদের লক্ষ্য। ভবিষ্যতেও এ ধরনের আয়োজন অব্যাহত থাকবে।’






