শেরপুরে যুবদল নেতা হোসেন আলীকে দল থেকে বহিষ্কার

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: চাঁদাবাজির অভিযোগে শেরপুর জেলা যুবদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. হোসেন আলীকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় যুবদল। ১৩ জুলাই রোববার সংগঠনের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মো. নূরুল ইসলাম নয়নের স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে বেআইনি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় হোসেন আলীকে দল থেকে (বহিস্কার) অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানানো হয়।

বহিষ্কারাদেশ ঘোষণার পরপরই জেলা ও পৌর যুবদলে স্বস্তি এবং শৃঙ্খলার আবহ লক্ষ করা গেছে। নেতাকর্মীরা বলছেন, এ সিদ্ধান্ত যুবদলের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা অসন্তোষ ও দ্বন্দ্ব নিরসনে সহায়ক হবে।

জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আতারুল ইসলাম আতা সাংবাদিকদের বলেন, “দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষায় কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী ও প্রশংসনীয়। হোসেন আলীর কর্মকাণ্ডে আমরা বারবার বিব্রত হয়েছি। বহুবার সতর্ক করেও কোনো ফল হয়নি। এ ধরনের পদক্ষেপ দলের ভাবমূর্তি রক্ষায় অত্যন্ত জরুরি।”

শেরপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক পারভেজ আহমেদ বলেন, “দলীয় পদ ব্যবহার করে ব্যক্তিস্বার্থে চাঁদাবাজির অভিযোগে অভিযুক্ত কারও স্থান যুবদলে হতে পারে না। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে আমরা সাহস পেয়েছি, এটি যুবদলের অভ্যন্তরীণ শুদ্ধি প্রক্রিয়ার বড় পদক্ষেপ। দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ নেতাকর্মীরা যার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছিল, আজ সেই অন্যায়ের জবাব মিলেছে।”

নীতির রাজনীতিতে ফিরে যাওয়ার বার্তা দিয়ে জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আলহাজ্ব হযরত আলী বলেন, “অপরাধ করে কেউ দলের ছত্রছায়ায় থাকতে পারে না। এটি রাজনীতির জন্য অশুভ দৃষ্টান্ত। হোসেন আলীকে বারবার সতর্ক করা হয়েছিল, কিন্তু তিনি সংশোধন হননি। এই বহিষ্কার স্বস্তিদায়ক ও প্রয়োজনীয়।”

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ্ব সিরাজুল ইসলাম বলেন, “রাজনীতিতে শৃঙ্খলা, নীতি ও আদর্শকে প্রাধান্য দেওয়া জরুরি। যুবদলের এ সিদ্ধান্ত ইতিবাচক বার্তা বহন করে এবং দলীয় ঐক্য পুনর্গঠনে সহায়ক হবে।”

জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ পলাশ বলেন, “দলীয় পরিচয়ে অপব্যবহার করে কেউ অপরাধ করলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না, এটাই আমাদের বার্তা। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত আমাদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করেছে।”

হোসেন আলীকে বহিষ্কারের মধ্য দিয়ে যুবদলের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার পথে একটি বড় পদক্ষেপ নেওয়া হলো বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এটি শুধু একটি শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নয়, বরং এটি একটি রাজনৈতিক বার্তা, যে অপকর্ম করলে কেউই ছাড় পাবে না। স্থানীয় নেতারা বলছেন, দলের অভ্যন্তরীণ বিভাজন, অসন্তোষ ও শৃঙ্খলাহীনতার অবসান ঘটাতে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

  • Related Posts

    শেরপুরে আন্তর্জাতিক নির্মল বায়ূ দিবস-২০২৫ উদযাপিত

      ‘ন্যায্য জ্বালানীর অঙ্গীকার, নির্মল বাযু সবার অধিকার’-এমন প্রতিপাদ্যে শেরপুরে আন্তর্জাতিক নির্মল বায়ূ দিবস-২০২৫ উদযাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে ৮ সেপ্টেম্বর সোমবার স্কুল ক্যাম্পেইন কর্মসূচির আওতায় শেরপুর সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়…

    শেরপুরে আগুনে পুড়ে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে ডা. সানসিলা জেবরিন প্রিয়াংকা

      শেরপুর সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের কাঠালতলী এলাকায় আগুনে পুড়ে যাওয়া এক অসহায় মহিলা বাড়ি পরিদর্শন করেন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও শেরপুর সদর ১ আসনের ধানের শীর্ষের এমপি পদপ্রার্থী…

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    তাজা খবর:-

    শেরপুরে আন্তর্জাতিক নির্মল বায়ূ দিবস-২০২৫ উদযাপিত

    শেরপুরে আন্তর্জাতিক নির্মল বায়ূ দিবস-২০২৫ উদযাপিত

    শেরপুরে আগুনে পুড়ে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে ডা. সানসিলা জেবরিন প্রিয়াংকা

    শেরপুরে আগুনে পুড়ে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে ডা. সানসিলা জেবরিন প্রিয়াংকা

    বাজিতখিলা ইউনিয়নে সদর উপজেলা বিএনপির সদস্যদের পরিচিতি সভা

    বাজিতখিলা ইউনিয়নে সদর উপজেলা বিএনপির সদস্যদের পরিচিতি সভা

    নালিতাবাড়ীতে ভারতীয় মদ নিয়ে প্রাইভেটকারসহ গ্রেফতার ৩

    নালিতাবাড়ীতে ভারতীয় মদ নিয়ে প্রাইভেটকারসহ গ্রেফতার ৩

    শেরপুরে পদোন্নতি প্রাপ্ত পুলিশ সদস্যকে র‍্যাংক ব্যাজ পরিধান করালেন পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম

    শেরপুরে পদোন্নতি প্রাপ্ত পুলিশ সদস্যকে র‍্যাংক ব্যাজ পরিধান করালেন পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম

    শেরপুরে গণশুনানিতে রাজস্ব বিভাগ সম্পর্কে কোন অভিযোগ না থাকায় দুদক কমিশনারের সন্তোষ

    শেরপুরে গণশুনানিতে রাজস্ব বিভাগ সম্পর্কে কোন অভিযোগ না থাকায় দুদক কমিশনারের সন্তোষ

    দুঃখিত কপি করা যাবে না! ⚠️