
এক সময়ের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান এ ডি এম শহিদুল ইসলাম দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-৩ (শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী) আসনে সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হয়েছেন। বুধবার সকালে জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে শপথ নেন তিনি। শহিদুল শ্রীবরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান।
গত রোববার অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী শহিদুল ইসলাম ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম আব্দুল্লাহহেল ওয়ারেজ নাইমকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন।
নির্বাচন শেষে রিটার্নিং অফিসার আব্দুল্লাহ আল খায়রুম আ. লীগের প্রার্থী এ ডি এম শহিদুল ইসলামকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন। নির্বাচনে শহিদুল ১ লাখ ২ হাজার ৪৪৬ ভোট আর আব্দুল্লাহহেল ওয়ারেজ নাইম পান ৪৬ হাজার ৭২৮ ভোট। দুজনের ভোটের ব্যবধান ৫৫ হাজার ৭১৮। সহজ-সরল ও সাদাসিদে জীবনযাপনকারী শহিদুল একজন নন্দিত ও জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে বিপুল ভোটে এমপি নির্বাচিত হন বলে দলের নেতারা মনে করছেন।
আওয়ামী লীগ দলীয় ও শহিদুলের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়াকাজিরচর ইউনিয়নের মাদারপুর গ্রামের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলামের ছেলে। শহিদুল ২০১১ ও ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত খড়িয়াকাজিরচর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৯ সালের ২৪ মার্চ অনুষ্ঠিত শ্রীবরদী উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে আ. লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হিসেবে তিনি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন।
আ. লীগ দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের জোরালো মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন শহিদুল ইসলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দলের মনোনয়ন পাননি। সংসদ নির্বাচন শেষ হওয়ার পরপরই তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে বিজয়ী হন। কিন্তু এমপি পদে নির্বাচন করার লক্ষ্য নিয়ে গণসংযোগ অব্যাহত রাখেন। ২০২৪ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের ১৩ জন নেতা দলীয় মনোনয়ন চান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শহিদুল ইসলাম নৌকা প্রতীকের দলীয় মনোনয়ন লাভ করেন এবং বিপুল ভোটে বিজয়ী হন।
বুধবার শপথ গ্রহণের পর সদ্য নির্বাচিত এমপি শহিদুল ইসলাম বলেন, তিনি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে (শহিদুল) মনোনয়ন দিয়েছিলেন। জনগণ তাঁকে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী উপজেলাবাসীর প্রতি তিনি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। এখন তিনি (শহিদুল) গারো পাহাড়ের অবহেলিত এই দুই উপজেলার উন্নয়নের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন বলে জানান।